চিনিশপুর কালী মন্দির নরসিংদী জেলার বেশ প্রাচীন মন্দিরগুলোর মধ্যে একটি।
অনুমান করা হয় যে, ১৭৬০ সালে এই চিনিশপুর কালী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। দ্বিজ রামপ্রসাদ নামের একজন বীর সাধক এই কালী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। সাধক দ্বিজ রামপ্রসাদ ‘চিন ক্রম’ নামের সাধন প্রণালীতে অভ্যস্ত ছিলেন এবং সেই থেকেই কালক্রমে এই গ্রামটির নাম হয় চিনিশপুর। দ্বিজ রামপ্রসাদ নাটোরের মহারাজা রামকৃষ্ণ রায়ের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন। দেবীর অনুগ্রহ লাভ ও আদেশপ্রাপ্ত হয়ে তিনি চিনিশপুর গ্রামে আসেন এবং গ্রামের জঙ্গলাকীর্ণ পরিবেশে আশ্রয় লাভ করেন।
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা হাড়িধোঁয়া নদীর দক্ষিণ তীরে সদর থানার চিনিশপুর গ্রামে অবস্থিত এই কালী মন্দিরটি ছায়া সুনিবিড় নির্জন পরিবেশে গড়ে উঠেছে। কালীবাড়ীর মূল আকর্ষণ হচ্ছে প্রায় এক একর জমির উপর বেড়ে উঠা বিশালাকার একটি বট বৃক্ষ। এই বট বৃক্ষটির নিচেই পঞ্চমুখী আসন প্রস্তুত করে ইষ্ট দেবতার কৃপা লাভের জন্য সাধনা শুরু করেন এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সাধক এবং বৈশাখ মাসের অমাবস্যা তিথিতে তিনি সিদ্ধিলাভ করেন। দ্বিজ রামপ্রসাদের সিদ্ধি লাভের পর থেকেই বট বৃক্ষটি জনসাধারণের নিকট তীর্থকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করে। প্রতিদিন হাজারো নর-নারী বট বৃক্ষের নিচে সাধু দর্শনের জন্যে ভিড় করতে থাকেন। আজ থেকে প্রায় ২৫০ বছর আগে সাধক দ্বিজ রামপ্রসাদ জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে ইষ্ট দেবতার নামে দক্ষিণা কালী মূর্তি স্থাপন করেন। তখন থেকেই এ মন্দিরটি ব্যাপক পরিচিতি পেয়ে আসছে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য থেকে জানা গেছে, নরসিংদীর এই চিনিশপুর কালীবাড়ির বয়স ২৫০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সে হিসাবে এই মন্দিরের বটবৃক্ষটির বয়স ৩০০ বছরের কম হবে না।