তৃতীয় মেয়াদে জামায়াতের আমীর হিসেবে শপথ নেওয়ার সময় অঝোরে কেঁদে কেঁদে যা বললেন ডা. শফিকুর রহমান
Автор: Rising Cumilla
Загружено: 2025-11-28
Просмотров: 167
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে শপথ গ্রহণ করতে গিয়ে আবেগে বারবার ভেঙে পড়েন ডা. শফিকুর রহমান। পুরো শপথ অনুষ্ঠানে তাঁর কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে, চোখে দেখা যায় অশ্রু।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে অবস্থিত আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এই আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অভ্যন্তরীণ প্রধান নির্বাচন কমিশনার মাওলানা এটিএম মা’ছুম।
পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত ও তার অর্থ উপস্থাপনের মাধ্যমে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অর্থসহ পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বান্দরবান জেলার আমীর মাওলানা আব্দুস সালাম আযাদ।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানী, মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের এবং নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাশেমী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমীর আব্দুল মাজেদ আতাহারী ও মহাসচিব মুসা বিন ইযহার।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এড. একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নেয়ামুল বশির ও লে. জে. (অব.) হাসান সোহরাওয়ার্দী উপস্থিত ছিলেন।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নুর ও উচ্চ পরিষদ সদস্য হাসান মামুন, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইউসুফ আলী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান আলহাজ্জ কারী মোঃ আবু তাহেরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমীর মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলবৃন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, কর্মপরিষদ ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যবৃন্দ। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও নির্বাচন কমিশনার মোঃ আব্দুর রব।
শপথ গ্রহণ শেষে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্যবৃন্দ আমাকে আমীরে জামায়াত নির্বাচিত করে আমার উপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, এই দায়িত্ব পালনের জন্য আমি মোটেও উপযুক্ত নই। আমি আপনাদের মতই একজন। আমরা সম্মিলিতভাবে সংগঠন পরিচালনা করি।”
তিনি বলেন, “নানা ভুলত্রুটি সত্ত্বেও দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। এই ভুলত্রুটির জন্য আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। আপনারা আমার কোনো ভুল দেখলে সমালোচনা করবেন এবং সংশোধন করে দেবেন। আল্লাহ আমাকে সেই তাওফিক দান করুন যাতে আমি আপনাদের সমালোচনা ও সংশোধন গ্রহণ করতে পারি।”
আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মাঝে চিন্তা-ভাবনার পার্থক্য থাকতে পারে। সেই পার্থক্য আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দূর করবো। সব মান-অভিমান ভুলে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হয়ে গেলেও জাতি স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পায়নি। এর মূল কারণ দুর্নীতি ও দুঃশাসন। এই অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আল্লাহর রাসূল (সা.) প্রতিদিন সত্তর থেকে একশত বার ক্ষমা চাইতেন। এজন্য আমিও আল্লাহর কাছে বারবার ক্ষমা চাই। অনেকে তা পছন্দ করেন না, কিন্তু আমি ক্ষমা চাইতেই থাকবো।”
গত সাড়ে ১৫ বছরের নির্যাতনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই সময়ে বহু ভাই শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, কারাবরণ করেছেন। জেলখানা ছিল আমাদের প্রথম আবাসস্থল। আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় সরকার আমাদের বারবার জেলে পাঠিয়েছে।”
তিনি জানান, জামায়াতের তৎকালীন আমীর, নায়েবে আমীর, সেক্রেটারি জেনারেলসহ ১১ জন শীর্ষ নেতা শহীদ হয়েছেন এবং অনেকে আহত ও পঙ্গু হয়ে ‘জিন্দা শহীদ’ হিসেবে বেঁচে আছেন।
১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৭১, ১৯৯০ এবং গত সাড়ে ১৫ বছরে শহীদ হওয়া সবাইকে শহীদ হিসেবে কবুল করার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন তিনি। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়—এই দোয়া করি।”
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অতীতে প্রবাসীরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এবার তাদের ভোটার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাই—তারা যেন ভোটার হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।”
শেষে তিনি দেশের স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান এবং সংবিধানে বর্ণিত জনগণের সব অধিকার নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео mp4
-
Информация по загрузке: