কুসুণ্ডিকা-১

​কুশণ্ডিকা কী?
​কুশণ্ডিকা হলো বৈদিক বিবাহ পদ্ধতির একটি প্রধান আচার, যেখানে অগ্নিকে সাক্ষী রেখে বর ও কনে একসাথে পূজা করে এবং বৈদিক মন্ত্র পাঠ করে। এটি মূলত একটি যজ্ঞ, যা বিবাহের পবিত্রতা এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। এটি 'হোম' বা 'অগ্নিহোত্র' নামেও পরিচিত।

​কুশণ্ডিকার মূল আচারগুলো:
​অগ্নিস্থাপন: প্রথমে একটি যজ্ঞকুণ্ডে পবিত্র অগ্নি প্রজ্বলিত করা হয়। এই অগ্নিকে বিষ্ণু, রুদ্র ও অন্যান্য দেব-দেবতার প্রতীক হিসাবে ধরা হয়।

​লাজ হোম: এই পর্বে কনে তার ভাই বা অন্য কোনো আত্মীয়ের সাহায্যে খই (লাজা) অগ্নিতে আহুতি দেয়। এটি কনের সমৃদ্ধি ও দীর্ঘজীবনের জন্য করা হয়।

​সপ্তপদী: এটি কুশণ্ডিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। এই সময়ে বর ও কনে একসঙ্গে সাতটি মন্ত্র উচ্চারণ করে সাতটি পা ফেলে। এই সাতটি পদ জীবনের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিজ্ঞা বা অঙ্গীকারের প্রতীক। এর মাধ্যমে বর ও কনে একে অপরের প্রতি আজীবন বিশ্বস্ত থাকার শপথ নেয়।

​অগ্নি প্রদক্ষিণ: বর ও কনে একত্রে অগ্নিকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করে। এই প্রদক্ষিণ তাদের একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকারকে দৃঢ় করে।
​সংক্ষেপে, কুশণ্ডিকা হলো এমন একটি বৈদিক অনুষ্ঠান যেখানে মন্ত্রপাঠ, যজ্ঞ এবং প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে বর-কনেকে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এটি শুধুমাত্র একটি আচার নয়, বরং বিবাহের পবিত্র বন্ধনকে এক নতুন আধ্যাত্মিক স্তরে নিয়ে যায়।