ওসমান
Автор: Mufassil Islam
Загружено: 2025-12-14
Просмотров: 21561
ওসমান হাদি ও একটি সর্বজনীন মানবিক সিদ্ধান্ত !
——————————————————-
একজন মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক মস্তিষ্ক আঘাতে দীর্ঘদিন কোমায় থাকলে, সমাজের সামনে একসময় একটি কঠিন প্রশ্ন এসে দাঁড়ায়—
আমরা কি কেবল শরীরটিকে বাঁচিয়ে রাখব, নাকি মানুষটির মর্যাদাকে সম্মান করব?
বর্তমানে ওসমান হাদি–এর অবস্থা সেই প্রশ্নটিকেই সামনে এনেছে। আবেগ, রাজনীতি বা গুজব নয় - এই বিষয়টি বোঝা দরকার চিকিৎসাবিজ্ঞান ও বিশ্বজুড়ে গৃহীত নৈতিক বাস্তবতার আলোকে।
ওসমান হাদির বর্তমান বাস্তবতা
প্রাপ্ত চিকিৎসা তথ্য অনুযায়ী, ওসমান হাদি দীর্ঘদিন ধরে গভীর কোমায় আছেন। তাঁর মস্তিষ্কে হয়েছে অপরিবর্তনযোগ্য ক্ষতি। ব্রেইন স্টেম জড়িত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। লাইফ সাপোর্ট ছাড়া তিনি স্বতঃশ্বাস নিতে সক্ষম নন। একাধিক স্ক্যান ও পর্যবেক্ষণে কার্যকর কোনো উন্নতির লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
বিশ্বের যেকোনো শীর্ষ হাসপাতাল - যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ বা এশিয়ায় এই অবস্থাকে একইভাবে চিহ্নিত করে:
Irreversible neurological injury - যার অর্থ, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ফেরার আর কোনো বাস্তব সম্ভাবনা নেই।
“আর কিছু করার নেই” - এর মানে কী?
অনেকে মনে করেন, চিকিৎসকরা যখন বলেন “আর কিছু করার নেই”, তখন হয়তো তাঁরা হাল ছেড়ে দেন। বাস্তবে বিষয়টি তা নয়।
এর মানে হলো, চিকিৎসাবিজ্ঞানের সব সম্ভাব্য চেষ্টা ইতিমধ্যে করা হয়েছে,
মেশিন শরীর চালু রাখতে পারে, কিন্তু মানুষটিকে ফিরিয়ে আনতে পারে না
সচেতনতা, স্মৃতি, ব্যক্তিত্ব, কোনোটিই ফিরে আসার বাস্তব সম্ভাবনা নেই
এই পর্যায়েই চিকিৎসকরা পরিবারকে কঠিন সত্যটি জানান—
এখন যা চলছে, তা জীবন নয়; কেবল জীববিজ্ঞান টিকিয়ে রাখা।
বিশ্বজুড়ে পরিবারগুলো কী সিদ্ধান্ত নেয়?
এখানেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা জানা জরুরি।
যখন নিশ্চিত হয় যে অবস্থা অপরিবর্তনযোগ্য—
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপে ৬০–৮০ শতাংশ পরিবার দীর্ঘ আলোচনা ও মানসিক দ্বন্দ্বের পর
লাইফ সাপোর্ট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়
এটি কোনো তাড়াহুড়ো নয়। এটি আসে বাস্তবতা বুঝে নেওয়ার পর।
আন্তর্জাতিক বাস্তব কেসগুলো কী বলে?
————————————
বিশ্বজুড়ে বহু আলোচিত কেস একই সত্য দেখিয়েছে।
Terri Schiavo (যুক্তরাষ্ট্র): ১৫ বছর ভেজিটেটিভ অবস্থার পর লাইফ সাপোর্ট বন্ধ
Tony Bland (যুক্তরাজ্য): পরিবারই বলেছিল—“এভাবে বেঁচে থাকা জীবন নয়”
Vincent Lambert (ফ্রান্স): দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর চিকিৎসা প্রত্যাহার
Alfie Evans ও Charlie Gard (যুক্তরাজ্য): আবেগী লড়াই সত্ত্বেও চিকিৎসাবিজ্ঞান বদলানো যায়নি
একটি বিষয় সব কেসে অভিন্ন—
কেউ অলৌকিকভাবে ফিরে আসেনি।
ধর্ম ও নৈতিকতার প্রশ্ন
অনেকের মনে ভয়—লাইফ সাপোর্ট বন্ধ মানেই কি “মেরে ফেলা”?
বিশ্বের প্রধান চিকিৎসা ও নৈতিক সংস্থাগুলো স্পষ্টভাবে বলে -
লাইফ সাপোর্ট প্রত্যাহার হত্যা নয়, এটি কৃত্রিম সহায়তা বন্ধ করা ! প্রকৃতিকে তার স্বাভাবিক পথে চলতে দেওয়া ! আধুনিক ইসলামী ফিকহ বোর্ডগুলোর বড় অংশও একই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, যখন চিকিৎসা নিরর্থক, তখন কৃত্রিমভাবে জীবন দীর্ঘ করা বাধ্যতামূলক নয়।
ওসমান হাদির ক্ষেত্রে আসল প্রশ্ন
প্রশ্নটি আর এই নয় - তিনি বাঁচবেন কি না।
প্রশ্নটি হলো, তিনি কি কখনো সচেতন মানুষ হিসেবে ফিরবেন?
নাকি কেবল মেশিন নির্ভর একটি শরীর হয়ে থাকবেন? যদি উত্তরটি হয় “না”,
তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়, আমরা কাকে রক্ষা করছি? মানুষটিকে, নাকি আমাদের নিজের আবেগকে?
ওসমান হাদির ক্ষেত্রে লাইফ সাপোর্ট প্রত্যাহারের আলোচনা কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, কোনো নিষ্ঠুরতাও নয়। এটি সেই একই মানবিক সিদ্ধান্ত, যা বিশ্বের সব সভ্য সমাজে, সব আধুনিক হাসপাতালে, একই বাস্তবতায় পৌঁছে নেওয়া হয়।যখন আর বাঁচানো সম্ভব নয়, তখন মর্যাদার সঙ্গে বিদায় জানানোই সবচেয়ে মানবিক ও সর্বজনীন নৈতিক সিদ্ধান্ত।
গবেষক: ড. মুফাসসিল ইসলাম
#osmanhadi
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео mp4
-
Информация по загрузке: