এক দিনে ১৮ কিমি বনের গহিনে || Rema Kalenga || Wildlife Sanctuary
Автор: Palash Biswas
Загружено: 2022-07-23
Просмотров: 1995
#remakalenga #sanctuary #travelbangladesh #sylhet
এক দিনে ১৮ কিমি বনের গহিনে || Rema Kalenga || Wildlife Sanctuary
রেমা-কালেঙ্গা। দুটি আলাদা বন কিন্তু একই জায়গায় পাশাপাশি। একদম হঠাৎ করেই একদিন এই বনের কথা মাথাই এলো। আর আসা মাত্রই এই বন আর জঙ্গল দেখার ভূত চেপে বস্ল মাথায়।
আরো কিছু পাগল্কে সাথে জুটিয়ে শুরু হল ঢাকা থেকে যাত্রা। ভোরের পাখি উঠার আগেই শায়েস্তাগঞ্জ নতুন বাজার পৌঁছে গেলাম। ডিসেম্বরের শীতে রাস্তায়ই বসে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে দিলাম। কারন ভোর হওয়ার আগে এখান থেকে সরতে মানা করে দিয়েছেন আমাদের গাইড নোমান ভাই।
ভোর হতেই একটা বড় অটোতে চুনারুঘাট মধ্য বাজার এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। এখানেই দেখা হবে গাইড নোমান ভাইয়ের সাথে। এখানে নেমে নাস্তা করে আবার সিএনজি ঠিক করা হল। রেমপয়েন্টে পৌছে শুরু হবে বনের মধ্য দিয়ে আমাদের হাইকিং
সকাল ৮টায় পৌঁছে গেলাম চুনারুঘাট।
রেমা দিয়ে ঢুকতেই একটা দুর্লভ গাছের সাথে পরিচয় হল। তারপর নৌকা দিয়ে ছোট একটা নদী পার হলাম। সাথের বেশির ভাগ ব্যাগ আমরা সিএনজি দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি কালেঙ্গা তে নির্ধারিত কটেজে। কারন কালেঙ্গা পৌঁছাতে আমাদের দুপুর থেকে বিকাল হয়ে যাবে তাই হাইকিং এ বাড়তি বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়া গেল।
রেমা থেকে কালেঙ্গা প্রায় ১৮ কিমি হাটা, আর পরের দিন আরো ১০ কিমি। দুইদিনে প্রায় ৩০ কিমি হাটা!
হাটা শুরু করতেই এক সবুজের ঢেউ মন জুড়িয়ে দিল। শকুনের অভয়ারণ্য দেখার জন্য একটু বেশি হাটা লাগলেও দেখে আসলাম সবাই।
এখানে একটু পরপর পানির কল আছে, তাই কড়া রোদ থাকলেও একটু পরপর মিলছিল ঠান্ডা পানির প্রশান্তি।
চুনারুঘাট থেকে ৩ ঘণ্টা হাটার পর আমরা বিট অফিসে এসে পউছালাম। এইটাই বনের মধ্যে শেষ লোকালয় এর পর কোথাও মানুষের দেখা পাওয়া যাবে না।
বনের মধ্যে বিট অফিসে বেশ কিছুক্ষণ বিশ্রামের সুযোগ আর তাজা ফল খেয়ে সবাই যেন প্রাণ ফিরে পেলাম । নোমান ভাই আমাদের গাছ থেকে কামরাঙ্গা পেরে দিলেন । এত মিষ্টি কামরাঙ্গা এর আগে কখনো খাইনি । এর পর আবার হাঁটা শুরু বনের মধ্যে দিয়ে ।
বেশ কিছু প্রাণী, পাখি আর গাছের সাথে পরিচিত হয়ে নিলাম । হাঁটতে হাঁটতে আমাদের অবসস্তা আর নেই। যারা adventure পছন্দ করেন তাদের জন্য আমার একটা উপদেশ ।। সব সময় backpack হাল্কা রাখার চেষ্টা করবেন এতে হাঁটতে কষ্ট কম হবে এবং সাথে সব সময় পানি এবং শুকনা খাবার রাখবেন । খেজুর বেস্ট অপশন যা আপনাকে অনেক শক্তি দিবে ।। মাঝে আমরা একটু খেজুর খেয়ে শক্তি জুগিয়ে আবার হাঁটা শুরু করলাম ।
প্রায় ৩ ঘণ্টা হাঁটার পর আমরা একটা লোকালয় খুঁজে পেলাম । সেইখানে এসে কিছু জল পানি খেয়ে আমার হাটা শুরু করলাম । নোমান ভাই আমাদের একটু পর পর এ আশ্বাস দিছেলেন আর বেশি দুর না এইত সামনে । এই সামনে আর শেষ হওয়ার মত না
ব্যাকগ্রাউন্ডে একটাই গান বাজছিল কত দুর আর কত দুর
দুপুর ৩.৩০ এ আমরা কালেঙ্গার সরকারি কটেজে পৌছালাম। ততোক্ষণে সবাই একেবারে বিধ্বস্ত। কটেজের বাইরেই ঘাসের উপর শুয়ে পড়ল সবাই। নাওয়া খাওয়া শেষে কয়েকজন সিদ্ধান্ত তারা আগামীকাল আর হাঁটবে না!
সন্ধ্যায় বাজারের চায়ের দোকান, কটেজের সামনের মাঠে আড্ডা দিয়ে বেশ ভাল সময় কাটল আমাদের। রাতে বারবিকিউর পর চলল আরেক দফা গান আর আড্ডা।
সকালে খিচুড়ি দিয়ে নাস্তা করে শুরু হল আবার আমাদের যাত্রা। খিচুরি আর ডিম আমরা সবাই পেট ভরে খেয়ে নিলাম । নাস্তা শেষে আমরা চলে গেলাম বাজারে । এর নাম রেমা কালেঙ্গা বাজার ।। ছোট একটা বাজার কিন্তু প্রয়োজনীয় সব এ পাওয়া যায় । আমরা এক ডজন পাহাড়ি কলা কিনে নিলাম। এত শুশাধু কলা ঢাকা তে পাওয়া যায় না । তাই ইচ্ছা মত খেয়ে নিলাম । গরুড় দুধের চা ও বেশ ভালো ছিল সাথে ছিল গরম গরম সিঙ্গারা
ঠিক ১২ টার দিকে বের হয়ে গেলাম আমরা
কালেঙ্গা থেকে হিজলছড়া চা বাগান হয়ে শ্রীমঙ্গল দিয়ে বের হব আমরা। এই দিকের বন কিছুটা আলাদা। আজকে যেতে হবে ১০ কিমি.
আরেকটু সামনে এগোতেই দেখা হয়ে গেল মুখপোড়া হনুমানের পরিবারের সাথে। দলে দলে ঘুরে বেড়ায় এরা।
কিছুটা হেটে আরেকটা বিট অফিস পাওয়া গেল। সঙ্ঘে রাখা কলা আর পানি খেয়ে এখানে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলাম
এর পর আবার হাটা শুরু। এসময় বৃষ্টির আভাস পাওয়া যাচ্ছিল।
হটাত করে এক দল বানরের দেখা পেয়ে গেলাম
বনের একেবারে শেষ প্রান্তে আছে একটা কাঠের ব্রিজ। বন শেষ হওয়ার দৃশ্যমান চিহ্ন। এটা পেরোলেই হিজলছড়া চা বাগান সহ আরো কিছু বাগান আছে। বেশ দৃষ্টিনন্দন এই জায়গাটা আর সচরাচর ট্যুরিস্ট আসে না এদিকটায়। দিনের শেষ আলোয় অনেক স্মৃতি গাঁথা হল।
চা বাগান থেকে বের হয়ে সিএনজি করে সরাসরি শ্রীমঙ্গল। হালকা বৃষ্টি শুরু হল। আমরা কুটুমবাড়ি তে বিখ্যাত সাতকড়া খাসীর মাংস দিয়ে খেয়ে নিলাম। এরপর মিষ্টি। এবার বিদায় নেবেন আমাদের গাইড নোমান ভাই। আমার দেখা সেরা একজন গাইড। বিনয়ী, ভদ্র, পরিবেশ সচেতন একজন গাইড যিনি বন ও বনপ্রানীকে নিজের আপনজন ভাবেন। কাজটা তিনি মনের তাড়নায় করেন। অত্যন্ত ট্যুরিস্ট বান্ধব ও বটে। অনেক জানেন এই বনের পশু পাখি গাছ সম্পর্কে। নোমান ভাই বাইকে করে বিদায় নিলেন।
প্রকৃতি নিজেই বাজিয়ে দিল বিদায়ের ঘন্টা।
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео mp4
-
Информация по загрузке: