২০২৬ এর ভোট হবে এই এস আই আর ইস্যুতেই, আর তা কেন বিজেপির বিরুদ্ধেই যাবে জেনে নিন।
Автор: বাংলা বাজার BANGLA BAZAR
Загружено: 2025-11-04
Просмотров: 66142
সেই শুরুতেই বলেছিলাম, এস আই আর ব্যুমেরাং হবে, আজ কলকাতা, বাংলার মানুষ তার ট্রেলার দেখলো। রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো উপচে পড়া ভিড়, সাত জন যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন তাদের শহীদবেদী, রাস্তায় মানুষের ঢল, সামনে মমতা, পেছনে নেতা কর্মীরা। হ্যাঁ এক ঝলক দেখে নিন। বলেছিলাম এটাই হবে। আসলে মমতার রাজনীতিটা হল এক প্রতিবাদের রাজনীতি। হ্যাঁ মমতা সরকারি কর্মচারীদের ডি এ দিচ্ছেন না, না তিনি রাজ্যে বিরাট শিল্পায়ন করেছেন, এসব বললেও আসলে তা হয় নি, বহু দূর্নীতি তো আছেই, শিক্ষায় এক বিরাট গোলযোগ আছে, আবার তিনি তো কোট আনকোট কমিউনিস্টও নন, কিন্তু এক্কেবারে গরীবমানুষগুলোর কাছে এক বিরাট সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তারা ১০০ দিনের কাজ, লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থসাথী ইত্যাদি প্রকল্পগুলো দিয়ে অন্তত দুবেলা খেয়ে পরে আছে রাজ্যের সবথেকে গরীব মানুষজনেরা। হ্যাঁ সেই ন্যুনতম ব্যবস্থাটা তিনি করতে পেরেছেন। আর অন্যদিকে এখনও আমরা দেখিনি যে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভকে সে ভাঙড় হোক, দেউচা পচামি হোক পুলিশ দিয়ে এক্কেবারে পিটিয়ে তুলে দেবার কোনও ঘটনাও আমরা দেখিনি। কিন্তু কেবল এই টুকু সম্বল করে এতদিন সরকারে থাকা যায়? মধ্যবিত্ত বাঙালি আর তাদের ইচ্ছের প্রতিফলন বাংলা সংবাদ মাধ্যমে কত বিরোধিতা, প্রায় রোজ নিয়ম করে সান্ধ টিভির পর্দাতে বিশেষজ্ঞরা বুঝিয়েই যাচ্ছেন রাজ্য তো শেষ, ভবিষ্যত তো শেষ, বাঙালির তো আর কোথাও কোনও কাজ নেই, এখানে তো চিকিৎসা হয় না, এখানে উচ্চ শিক্ষা নেই, রোজ আমরা সেসব বিশেষজ্ঞ দের বক্তব্য তো শুনছি, তারপরেও ভোট হচ্ছে আর তৃণমূল জিতে যাচ্ছে কেবল ছাপ্পা ভোটে? কেবল বুথ দখল করে? সেই ২০১৯ এ বলা হয়েছিল, এবারে এমন টাইট দেওয়া হবে না, তো কী হয়েছিল? বামের ভোট লকস্টক ব্যারেল রামে গিয়ে বিজেপি ১৮ টা সাংসদ জিতেছিল এই তো। তারপরে আরও প্রবল কড়াকড়ি, সেন্ট্রাল ফোর্স, অবজার্ভার, মিডিয়া, ২০২১ এ গেল গেল রব তোলা হলো, বিজেপির ছায়া মন্ত্রী সভাও তো তৈরি হয়েছিল, কিন্তু শেষ মেষ ৭৭? বামেরা শূন্য? কেন? ২০২৪ আবার কড়াকড়ি, রেজাল্ট? ১৮ থেকে ১২, কেন? কারণ বিজেপি, বছরগুলোতে মমতার হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে, অবশ্যই না বুঝে, না জেনেই। প্রতিপক্ষের হাতে অস্ত্র অনেক সময়েই না জেনেই তুলে দেয় শাসক দল। মমতার রাজনীতির ধারা হল প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এক সরাসরি মুখোমুখি লড়াই, কোনও বোঝাপড়া নেই, কোনও ছাড় নেই, প্রতিপক্ষ মানে শত্রু আর শ্ত্রু মানে তার সঙ্গে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়ে যেতে হবে, যে কোনও মূল্যে, যে কোনওভাবে, তার জন্য যা যা করার তিনি করবেন। শুরুর দিকে সেই প্রতিপক্ষ ছিল সিপিএম, কংগ্রেসের বহু নেতাকে বলতে শুনেছি এরকম সিপিএম বিরোধিতার মানে কী? কারা বলতেন? কলকাতায় বসে থাকা কংগ্রস নেতারা, মাঝেমধ্যেই সিপিএম নেতাদের সঙ্গে তাঁদের দেখা সাক্ষাৎ হয়, বন্ধুত্ব আছে, হাসি ঠাট্টা তামাসা সবই চলে, বিভিন্ন সাহায্যেরও ব্যাপার চলে, হাউজিং প্রকল্পে ফ্ল্যাট থেকে চিকিৎসার সাহায্য থেকে পুলিশের সাহায্য, সবরকম। কিন্তু মমতার এসব ছিল না, উনি লড়ছেন মানে লড়ছেন আর তাই সঙ্গে পেয়েছিলেন গ্রাম বাংলার সেইসব কংগ্রেসী কর্মীদের আস্থা যারা সিপিএম এর চাপে কাজ হারিয়েছে, ব্যবসা হারিয়েছে, জমি হারিয়েছে, এমনকি ভোটাধিকার হারিয়েছে, সেই হাত কেটে নেবার ঘটনাও তো ঘটেছিল। এক্কেবারে আপসহীন সেই লড়াইতে তাঁর মনে হল বিজেপির সাহায্য লাগবে, নিয়েছিলেন, আবার বুঝেছেন বিজেপির সাথে থাকলে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষদের সমর্থন হারাবেন, ফিরে এসেছেন, আবার কংগ্রেসের হাত ধরেছেন এবং একটা সময়ে সিপিএম রাজের অবসান। আমরা বলাবলি করতাম তাহলে মমতা লড়বেন কার সঙ্গে। খেয়াল করুন এবং ভাগ্যবিশ্বাসীরা মমতার ভাগ্যকে ঈর্ষা করুন, ঠিক এই সময়ে বিজেপির উথ্বান। ২০১৬ পর্যন্ত যা ছিল না, ১৯ এ সেটাই এসে গেল, এক প্রতিপক্ষ আর তাও আবার এক উত্তর ভারতীয় হিন্দি হিন্দু হিন্দুস্থান, হিন্দুত্ববাদী বিজেপি। মমতা সেদিন থেকেই সেই শক্তির মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন আর তারা মমতাকে ইস্যু যুগিয়ে গেছেন, পরের পর ইস্যু। মমতা পুজো নিয়ে মাতামাতি আজ করেন না, সে ওনার বহুকালের ব্যাপার, বাড়িতে কালীপুজো, স্বরস্বতীপুজো এসব তো ছিলই, কিন্তু তারসঙ্গে জুড়ে নিলেন সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের অস্ত্রকে রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সারদার বাঙ্গালাতে সেটাই তো ছিল স্বাভাবিক, বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁর দুটো হাতিয়ার ক্রমশ ধারালো হতে থাকলো এক হল সর্ব ধর্ম সমন্বয়, ইফতারেও যাবো, জগন্নাথ মন্দিরও করবো, দুর্গাপুজো কার্নিভাল ও করবো, বড়দিনে চার্চেও যাবো, গুরুদ্বারাতেও যাবো, আর এটা সাধারণ ধর্মবিশ্বাসী বাঙালির কাছে যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য আর বোধগম্য। কেন প্যান্ডেল থেকে সাড়ে তেত্রিস পা দূরে লাল শালুদিয়ে ঘেরা এক বই এর স্টলে বসে থাকবো? হ্যাঁ সাধারণ মানুষ এর কাছে সেটা বোধগম্যও ছিল না, বিশ্বাসযোগ্যও ছিল না। দ্বিতীয় হাতিয়ার হল বাঙালি অস্মিতা, বাংলার মেয়ে। ওদিকে তো রেখেছো বিজেপি করে মাগো বাঙালি করো নি। যাওবা এক বাউলের বাড়িতে পাত পেড়ে খেতে বসলেন অমিত শাহ, খাবার ছবিতে দেখা গেল রুটি দিয়ে আলু পোস্ত খাচ্ছেন, পাশে দাল চুমুক দিচ্ছেন। বাঙালির কাছে এটা তো ক্রিমিনাল অফেন্স। তো সেই বাঙালি চেহারা, বাঙালি অস্তিত্বকে আরও উসকে দিয়ে বাংলার মেয়ে মমতাই ফিরবে শ্লোগানও মানুষ নিলো। কিন্তু সব অস্ত্র তো চিরদিনের জন্য হয় না, অস্ত্রেরও বয়স হয়, তাতেও মরচে ধরে, সবথেকে বড় কথা অস্ত্রকে পালিশ করার জন্যও কিছু ইস্যু চাই, এক্কেবারেই নেই তা বলছিনা কিন্তু এই ২০২৪ এ এসে মনে হচ্ছিল ২৬ এর জন্য মমতার একটা অস্ত্র দরকার, আরও একতা অস্ত্র, মনে হচ্ছিল মমতাও সেটার খোঁজে আছেন। তো কপালের নাম গোপাল, বিজেপি এক্কেবারে অস্ত্র সাজিয়ে প্লেটে করে উপহার দিয়ে দিল। বিহারে এস আই আর চালু করার সঙ্গে সঙ্গেই মমতা হুঙ্কার দিলেন, এ রাজ্যে এস আই আর করতে দেবো না। ব্যস, শুভেন্দুবাবুর মনে হল এস আই আর এ ভয় পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাহলে যদি এই এস আই আর নিয়ে নামা যায় তাহলে বাংলার দূর্গজয় তো কেবল সময়ের অপেক্ষা। তাঁর বোধের অতীত ছিল মমতা খেলাটাকে নিজের মাঠে নিয়ে যাওয়ার ডাক দিচ্ছিলেন।
/ @chalojaai-banglabazar
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео mp4
-
Информация по загрузке: