ডায়াবেটিস রোগীরা কি তরমুজ খেতে পারবে ? Diabetes control Fruits | Dr Biswas

ডায়াবেটিস রোগীরা কি তরমুজ খেতে পারবে ?

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যতালিকায় কোনো খাবার রাখার সময় আপনাকে অবশ্যই পাঁচটি জিনিস লক্ষ্য করতে হবে | প্রথমেই দেখতে হবে খাবারটি সুগার নিয়ন্ত্রণে কতটা ভালো, তারপর দেখতে হবে হৃদরোগ, কিডনি রোগ, ডায়াবেটিসজনিত চোখের রোগ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে কতটা ভালো | আসুন পাঁচটি প্যারামিটারে তরমুজকে বিশ্লেষণ করে দেখা যাক তরমুজ মোট ১৮ পয়েন্টে কত পয়েন্ট পাবে ? পয়েন্ট যতো বাড়বে ডায়াবেটিস কমানোর উপায় হিসাবে তরমুজ ততো ভালো | আলোচনা শুনতে শুনতে কমেন্টে উত্তর দিয়ে দিন , তরমুজ ১৮ তে কত পয়েন্ট পেতে পারে |


১) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের প্রথম প্যারামিটার - হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ -


২) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ২য় প্যারামিটার - ডায়াবেটিসজনিত চোখের রোগ প্রতিরোধ -



৩) ডায়াবটিস নিয়ন্ত্রণের ৩য় প্যারামিটার - ওজন নিয়ন্ত্রণ -


৪) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ৪র্থ প্যারামিটার - সুগার নিয়ন্ত্রণ -

উপাদানগুলির দিকে একটু দৃষ্টি দিলেই সুগার কমাতে তরমুজ কেমন তা সহজে বোঝা যাবে |

প্রতি ১০০ গ্রাম তরমুজ থেকে আপনি ফাইবার পাবেন মাত্র ০.৪০ গ্রাম, প্রোটিন ০.৬১ গ্রাম আর ফ্যাট পাবেন ০.১৫ গ্রাম | এই তিনটি উপাদানই আপনার blood sugar কমিয়ে রাখবে | উপাদান তিনটি যোগ করেও মাত্র ১.১৬ গ্রাম | সেখান ব্লাড সুগার বাড়ায় যে নেট কার্বোহাইড্রেট সেটি ৭.২০ গ্রাম | তরমুজের নেট কার্বোহাইড্রেট তুলনামূলকভাবে অত্যাধিক বেশি হওয়ায়, তরমুজ যে সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য ভালো নয় তা অনুমান করা যায় | আসুন অনুমানকে আরো নিশ্চিত করা যাক তরমুজের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোডকে বিশ্লেষণ করে |

তরমুজের ভ্যাড়াইটি অনুযায়ী গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ৭২ থেকে ৮০ - গড়পড়তা ৭৬ ই ধরে নিন । ৭৬ কতটা বেশি অন্য খাবারের সাথে তুলনা করলে বুঝতে পারবেন | ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিপজ্জনক চিনির গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ৬৫ আর অন্যদিকে সাদা চালের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স গড়পড়তা ৭০ | মানে তরমুজ চিনি ও ভাতের থেকেও দ্রুত ব্লাড সুগার বাড়াতে পারে | তবে গ্লাইসেমিক লোড ভাত, চিনির থেকে অনেক কম হবে, কারন তরমুজে চিনি ও ভাতের থেকে অনেক বেশি জল ও অনেক কম নেট কার্বোহাইড্রেট থাকে | প্রতি ১০০ গ্রাম তরমুজের গ্লাইসেমিক লোড ৫.৫০ |

তরমুজের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড থেকে দেখা যাচ্ছে তরমুজ দ্রুত ব্লাড সুগার বাড়ালেও মোটের উপর ব্লাড সুগার কমই বাড়াবে | মানে তরমুজ খেতে গেলে আপনাকে হিসাব করে বুদ্ধি খাটিয়ে খেতে হবে | আলোচনার শেষে তরমুজ খাওয়ার নিয়মে এবিষয়ে বিস্তারিত বলব |

তার আগে তরমুজকে তার পয়েন্ট দিয়ে দিই | ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ৪র্থ প্যারামিটারে তরমুজকে আমরা ১০ এ দেব ৩ পয়েন্ট |


৫) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ৫ম প্যারামিটার - কিডনির রোগ প্রতিরোধ -



ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ৫টি প্যারামিটার বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে তরমুজ উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, কিডনির রোগ, চোখের রোগ ও ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য খুবই উপকারি হলেও সুগার নিয়ন্ত্রণে খুব একটা ভালো না | তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের প্যারামিটারে ১৮ এর মধ্যে তরমুজ ১১ পয়েন্ট পাবে |

এবার আসুন জেনে নিন কীভাবে তরমুজ খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি লাভ পাবেন -

১) কোন খাবার কতটা খেলে ব্লাড সুগার সীমার বাইরে যাবে না তা বোঝা যায় তার গ্লাইসেমিক লোড থেকে । গ্লাইসেমিক লোড ০ থেক ১০ পর্যন্ত থাকলে মোটের উপর ব্লাড সুগার কম বাড়বে | ১১ থেকে ২০ এর মধ্যে থাকলে মাঝারি ব্লাড সুগার বাড়াবে | আর ২০ এর উপরে গ্লাইসেমিক লোড হলে অত্যধিক ব্লাড সুগার বাড়বে | তাই কোন কিছু খাওয়ার সময় প্রথমেই দেখতে হবে খাবারটির গ্লাইসেমিক লোড যতটা সম্ভব কম রাখা যায় |

আগেই দেখেছি ১০০ গ্রাম তরমুজের গ্লাইসেমিক লোড ৫.৫০ | তাহলে গ্লাইসেমিক লোড ১০ এর মধ্যে রাখতে হলে তরমুজকে ২০০ গ্রামের বেশি না খাওয়াই ভালো |


২) তরমুজের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স যেহেতু খুব বেশি | তাই তরমুজ খুব তাড়াতাড়ি খাবেন না । ধীরে ধীরে সময় নিয়ে তরমুজ খান দেখবেন ব্লাড সুগার বাড়ার ভয় অনেকটাই কমে যাবে |

৩) তরমুজের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স যেহেতু খুব বেশি তাই শুধু তরমুজ না খেয়ে তরমুজের সাথে অন্য কম গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্সের ফল মিশিয়ে ফ্রুট স্যালাড করে খান | এতে সামগ্রিক ফ্রুট স্যালাডের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স কমে যাবে ফলে ব্লাড সুগার বাড়ার ভয়ও কমবে |

৪) তরমুজের সাথে বাদামের মতো খাবার খান | এতে বাদামের ফাইবার, ফ্যাট ও প্রোটিন তরমুজের ব্লাড সুগার বাড়ানোর ক্ষমতা কমিয়ে দেবে |

৫) খালি পেটে তরমুজ খাবেন না | এতে তরমুজ তাড়াতাড়ি পরিপাক হবে, ফলে দ্রুত ব্লাড সুগার বেড়ে বিপদ ঘটাবে | ছোলা, বাদাম, মাছ, মাংসের মতো খাবার খাওয়ার পর তরমুজ খেলে তরমুজের পরিপাক স্লো হয়ে যাবে , ফলে ব্লাড সুগারও ধীরে বাড়বে |

অর্থাৎ ডায়াবেটিস রোগীরা অবশ্যই তরমুজ খাবেন, তবে নিয়মগুলি মেনে তবে খান - দেখবেন blood sugar control এ থাকবে |


এটি একটি শিক্ষামূলক আলোচনা যা বিভিন্ন গবেষণাপত্রের তথ্য নির্ভর ।


For Sponsorship & Business
Enquiries :-
[email protected]


Disclaimer: Contents including advice provides generic information only . All data and statistics are based on publicly available data at the time of publication . The content and the information in this video are for informational and educational purposes only, not as a medical manual . Dr Biswas youtube channel does not provide medical advice, diagnosis or treatment . Always consult a specialist or your own doctor for more information . Dr Biswas youtube channel does not claim responsibility for this information.

Bengali Health Tips
Dr Biswas