আমাদের মূর্খ প্রধানমন্ত্রীর দেশের জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস জানা নেই। তাই সংসদে মিথ্যে বলছেন।
Автор: বাংলা বাজার BANGLA BAZAR
Загружено: 2025-12-08
Просмотров: 27364
বিজেপি চলছে তার নির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে, ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে, অর্ধসত্য নিয়ে। আজ আর একবার সংসদে সেই ছবিই আমরা দেখলাম। মূর্খদের একটা সুবিধে হল তাদের কোনও কিছুই বলতে কোনও অসুবিধেই হয় না, সত্যি মিথ্যে মিলিয়ে কিছু একটা বলে গলার জোরে আর সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরেই সেই মিথ্যেকেই প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলে। আজ সেটাই আমরা দেখলাম সংসদে। আলোচনার বিষয় ছিল বন্দেমাতরমের ১৫০ বছর পূর্তি। আলোচনার শুরুয়াত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যিনি একাধারে মূর্খ, অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক। শুরুতেই বললেন বঙ্কিম দার বন্দেমাতরম, ওনার কোন বাপকেলে দাদা জানা নেই, তবে ধরিয়ে দেবার পরেও হ্যা হ্যা করে রকবাজের মত হাসলেন। কিন্তু আদতে যা বললেন তাকে খুব ছোট করে যদি বলি তাহলে ওনার বক্তব্য ছিল, ১) গান্ধিজী বলেছিলেন বন্দেমাতরম দেশের জাতীয় সঙ্গীত হোক। ২) ১৯৩৭ এ জিন্নার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস বন্দেভারতের এক অংশকে বাদ দিয়েছিল, এই গানকে জাতীয় সঙ্গীত হতে দেয় নি। ৩) স্বাধীনতা সংগ্রামে বন্দেমাতরম এর বিরাট ভূমিকা। বাকিটা হল কংগ্রেস আর নেহেরুর সমালোচনা যা না করে উনি সকালে জল অও মুখে দেন না। এক বামনের চাঁদের সঙ্গে নিজের তুলনা করার মতন উনি জহরলাল নেহেরুর সঙ্গে নিজেকে তুলনা করতে চান, কিন্তু আমাদের এই মূর্খ প্রধানমন্ত্রী যিনি টেলিপ্রম্পটার ছাড়া একটা পুরো বক্তৃতা দিতে পারেন না তিনি জানেনও না যে ইংরেজ দের জেলে বসে নেহেরু যে ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া লিখেছিলেন তা পড়ে উঠতে, না বোঝার কথা বাদই দিলাম পড়ে উঠতেও ওনার জীবন কেটে যাবে। তো উনি যা বললেন তার প্রথমটা হল ১৯০৫ এ গান্ধিজী তখনও এদেশে আসেন নি, উনি ইন্ডিয়ান ওপিনিয়ন পত্রিকাতে লিখেছিলেন বন্দেমাতরম গানের এক বিরাট ব্যপ্তি নিয়ে, তিনি লিখেছিলেন বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রেরণা হয়ে উঠেছে বন্দেমাতরম, যা জাতীয় সঙ্গীত হতেই পারে। মাথায় রাখুন তার কিছুদিন আগে ১৮৯৬ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে প্রথমবার এই গানটি রাজনৈতিক মঞ্চে গাওয়া হয় । এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে গানটার প্রথম দুটো স্তবক পরিবেশন করেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । মাথায় রাখুন এই গানের কথায় সুরও দিয়েছিলেন রবি ঠাকুরই। ১৮৯৬ সালের এই আনুষ্ঠানিক পরিবেশন গানটা ভারতের ইতিহাসে এক আলোড়ন তৈরি করে। হ্যাঁ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও কিন্তু ঐ প্রথম স্তবকই সেদিন গেয়েছিলেন। আর তারপর থেকেই গানের চেয়েও বন্দেমাতরম শব্দবন্ধই হয়ে ওঠে এক জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের শ্লোগান। সেই শ্লোগান আরও দীপ্ত হয়ে ওঠে অক্টোবর ১৯০৫, যখন কার্জন বঙ্গভঙ্গের ঘোষনা করেন। হ্যাঁ সেই খবর গিয়েছিল গান্ধিজীর কাছে এবং তিনি এই গানের ভূয়সী প্রশংসাই শুধু করেন নি, বলেছিলেন এই গান জাতীয় সঙ্গীত হয়ে উঠতেই পারে। তখনও জনগনমনঅধিনায়ক জয় হে সামনে আসেই নি। এর ২০ বছর পরে আর এস এস এর স্থাপনা, যে আর এস এস এর প্রচারক এই নরেন্দ্র মোদী, ১৯২৫ সালে। তারা কি এই বন্দেমাতরম কে তাঁদের শাখার প্রার্থনা সঙ্গীত করেছিলেন? আজ গলা কাঁপিয়ে এই মিথ্যেবাদী প্রধানমন্ত্রী যখন এই কথাগুলো বলছেন তখন যে সত্যিটা আগে জানতে হবে সেই ১৮৯৬ থেকে কংগ্রেসের প্রতি অধিবেশনে বন্দেমাতরম গাওয়া হয়েছে আর আজ অবদি আর এস এস এর শাখায় প্রার্থনা সঙ্গীত হল নমস্তে সদা বৎসলে হিন্দুভূমে ইত্যাদি। এবারে আসুন এই মিথ্যেবাদী মোদিজীর দ্বিতীয় মিথ্যেতে, ওনার বক্তব্য ১৯৩৭ এ জিন্নার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস এই গানকে জাতীয় সঙ্গীত তো হতে দেয়ই নি, বরং গানটার কিছু স্তবক বাদ দিয়েছিল এই জহরলাল নেহেরু, সুভাষ চন্দ্র বোস আর কংগ্রেস। সত্যিটা কী? এই মূর্খ প্রধানমন্ত্রী জানেন না, তাহলে বলি। এটা ঘটনা যে যে ভারতের শীর্ষ রাজনৈতিক সংগঠন কংগ্রেসই স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাথমিক পর্যায়েই এই গানটার আবেগময় শক্তিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু তার পরে 'বন্দেমাতরম' কেবল বাংলার সাহিত্য বা বিপ্লবের সম্পত্তি না থেকে, সর্বভারতীয় রাজনৈতিক এজেন্ডার এক শক্তিশালী অংশে হয়ে ওঠে। যে ৪২ এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণই করেন নি এই আর এস এস। সেই তারা আজ বন্দেমাতরম নিয়ে পথে। দু কানকাটাদের লজ্জা নেই। রবি ঠাকুর নিজেই গানটার দুটো স্তবক গেয়েছিলেন কিন্তু সেটা নিয়ে সেই সময়ে কোনও আলোচনা হয়নি। আলোচনা আবার হল কবে? ১৯৩৭ সালে, সেটা ছিল ভারতীয় রাজনীতির এক সন্ধিক্ষণ। প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর জাতীয় কংগ্রেস বিভিন্ন প্রদেশে ক্ষমতার মসনদে বসেছিল, কিন্তু এই সাফল্যে আর দায়িত্বের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার এক নতুন ও কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছিল। আগেই বলেছি, ইতিমধ্যেই সাভারকার তাঁর দ্বিজাতিতত্ত্বের কথা বলা শুরু করেছেন, বিভেদের বিষ ছড়ানো শুরু হয়ে গেছে, কংগ্রেসের মধ্যেও কিছু হিন্দুত্ববাদীরাও ছিলেন, তাঁরাও সুযোগ বুঝে সরব হবার চেষতা করছিলেন। আর ঠিক সেই সময়ে ‘বন্দেমাতরম’ গানটার সার্বজনীনতা নিয়ে বিরাট বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অল-ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ এবং তাদের শীর্ষ নেতা মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ প্রকাশ্যেই গানটার তীব্র বিরোধিতা শুরু করেন । মুসলিম লীগের আপত্তির মূল কারণ ছিল গানটার তৃতীয় এবং পরবর্তী স্তবকগুলো নিয়ে, যেখানে মা দুর্গা, লক্ষ্মীর মতো হিন্দু দেব-দেবীর উল্লেখ আছে। তাঁদের মতে, এই উল্লেখগুলো দেশের ধর্মীয় বহুত্ববাদী চরিত্র এবং মুসলিম সম্প্রদায় বা অন্যান্য মূর্তিপূজো-বিরোধী অবস্থানকে আঘাত করবে। এই ধর্মীয় উপাদান গানটাকে একটা সম্প্রদায়-ভিত্তিক প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অন্তত একটা ঝুঁকি তৈরি করতেই পারে। কংগ্রেস যদি এই ঐতিহাসিক সংগ্রাম-প্রতীকটাকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করত, তাহলে তা রাজনৈতিক ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারত। অন্যদিকে, গানটাকে সম্পূর্ণ বর্জন করলে ১৯০৫ সাল থেকে বয়ে আসা আত্মত্যাগের মহান ঐতিহ্যকে অস্বীকার করা হতো ।
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео mp4
-
Информация по загрузке: