বিলুপ্তির পথে সুস্বাদু শাপলার ফল '‘ঢ্যাপ’'ভেট''বেট"শালুক" ও খই,মোয়া।
Автор: নাসরিন পাট পল্লী
Загружено: 2024-11-04
Просмотров: 11085
বাংলাদেশের জাতীয় ফুল ‘শাপলা’। হাওড়, বিল ও দিঘিতেই বেশি ফোটে এই ফুল। তবে এই ফুল এখন আর আগের মতো সব জলাশয়ে দেখা যায় না। বাংলার পল্লির বাজারগুলোতে মাঝে মাঝে ঢ্যাপ বিক্রি করতে দেখা যেতো।
বিভিন্ন উৎসবে, বিশেষ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসবে বিভিন্ন রকম খই, নাড়ু, মুড়ির মধ্যে অন্যতম ছিল ঢ্যাপের খই ও খইয়ের মোয়া। কিন্তু এসব আর দেখা যায় না বললেই চলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাপলা সাধারণত বদ্ধ অগভীর জলাশয়, হাওড়-বাঁওড়, ডোবা, খাল-বিল অঞ্চলে জন্মে থাকে। সাধারণত দুই ধরনের শাপলা ফুল দেখা যায়—সাদা ও লাল। শাপলা ফুল যখন জলাশয়ে একসঙ্গে অনেকগুলো ফুটে থাকে তখন ওই জলাশয়ে এক অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়। আর এ ফুল যখন ফলে রূপান্তরিত হয় তাকে স্থানীয় ভাষায় ‘ঢ্যাপ’ 'ভেট' 'বেট' 'শালুক' ইত্যাদি বলা হয়। এ ঢ্যাপের ভেতরে অনেক ছোট ছোট বীজ থাকে। আগেরকার দিনে এগুলো মানুষ উঠিয়ে নিয়ে ভেঙে রোদে শুকিয়ে খই ভাজতেন। এ খই খুবই সুস্বাদু হয়। একসময় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর একটা বিরাট অংশ শাপলা ফুলের ডাটা (স্থানীয় ভাষায় নাল) তরকারি হিসেবে খেতেন।যা এখন অনেকের প্রিয় খাবার। ‘আগে এমন কোনো বাড়ি ছিল না যে বাড়িতে ঢ্যাপের খই, মোয়া পাওয়া যেতো না। আর এখন দশটি গ্রাম ঘুরলেও এই ঢ্যাপের খই বা মোয়া মিলবে কি না সন্দেহ।’
বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারের মধ্যে ঢ্যাপের খই ও গুড় দিয়ে তৈরি ঢ্যাপের মোয়া ছিল খুব সুস্বাদু। এখন বর্ষা নেই, শাপলার ফল ঢ্যাপও পাওয়া যায় না।’
‘ছোটবেলায় মা-কাকিদের সঙ্গে ঢ্যাপের খই ও মোয়া তৈরি করতাম। দিন দিন শাপলা হারিয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েক বছর হলো ঢ্যাপ চোখেই দেখি না সহজে।
‘আমাদের বাড়ির পাশে বর্ষার দিনে ফসলি জমিতেও বর্ষার পানিতে ভরে যেতো। এখন বর্ষার সময় পানি নেই। একেবার শুকনো। এসব স্থানে প্রচুর শাপলা ফুল ফুটতো। ভোরবেলায় শাপলার সাদা ফুলের সৌন্দর্য খুব মুগ্ধতা ছড়াতো। শাপলার ফল ঢ্যাপ কুড়িয়ে তার দানা শুকিয়ে খই ভাজা এখন যেন স্বপ্নের মতো মনে হয়।’
‘দিন দিন আবহাওয়া, জলবায়ুসহ সবকিছুরই পরিবর্তন হচ্ছে। ষড়ঋতুর সেই দেশ আর নেই। বর্ষার সঙ্গে সঙ্গে শাপলা হ্রাস পাচ্ছে। এখন আর ঢ্যাপ দেখা যায় না। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এই ঢ্যাপ কী চেনা তো দূরে থাক, নামই জানে না।’
এখন আগের মতো বর্ষা হয় না। খাল-বিল বিলীন, জমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক জলাভূমি ধ্বংসই এ সুস্বাদু শাপলা ও ঢ্যাপ বিলুপ্তির কারণ।
শাপলার মাটির নিচের মূল অংশকে আঞ্চলিক ভাষায় ‘শালুক’ বলে। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে বিলের পানি যখন কমে যায় তখন গ্রামের অনেক মানুষ শালুক তুলে বাজারে বিক্রি করতেন। সিদ্ধ শালুক বেশ সুস্বাদু। খাল-বিল-জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ার কারণে শাপলা জন্মানো ক্ষেত্রগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео mp4
-
Информация по загрузке: