শুরু হলো বিএনপির কামড়াকামড়ি | বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিতদের বিক্ষোভে উত্তাল বিভিন্ন জেলা আগুন জালিয়ে দিল

বিএনপির মনোনয়ন বন্টন বিক্ষোভে উত্তাল একাধিক জেলা, হাইওয়ের টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ! নিজ দলের কামড়াকামড়িতেই দিশেহারা বিএনপি শুরু হলো বিএনপির কামড়াকামড়ি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপি ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরপরই দেশের বিভিন্ন জেলায় তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। মনোনয়ন বঞ্চিত ও তাদের অনুসারী নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ-মিছিল, টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ এবং ভাঙচুরের মতো কঠোর কর্মসূচি পালন করেছেন।

বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পরপরই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, মাদারীপুর ও কুষ্টিয়াসহ একাধিক জেলায় বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

চট্টগ্রাম (সীতাকুণ্ড): দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লায়ন আসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান এবং বেশ কিছু যানবাহন ভাঙচুর করেন। তাদের দাবি, ত্যাগী ও কারানির্যাতিত নেতা আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন দিতে হবে।

মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাবেদ মাসুদ মিল্টনকে বাদ দিয়ে অন্যকে মনোনয়ন দেওয়ায় মিল্টনপন্থীরা গাংনী শহরে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ-মিছিল করেন এবং টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।

সাতক্ষীরা-৩ আসনে অপর প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ায় ডা. শহিদুল আলমের কর্মী-সমর্থকেরা অর্ধদিবস হরতাল পালন করেন। তারা হুঁশিয়ারি দেন যে শহিদুল আলম ছাড়া এ আসনে বিএনপির জয় সুদূরপরাহত।

মাদারীপুর শিবচর মনোনয়ন বঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভুল চৌধুরীর সমর্থকরা ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর এলাকায় সড়ক অবরোধ ও টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে।

কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের অনুসারীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

এদিকে, তীব্র বিক্ষোভের মুখেও দলীয় প্রধান কার্যালয় থেকে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শক্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে কুষ্টিয়ায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার জানিয়েছেন, কেন্দ্র থেকে কড়া নির্দেশনা রয়েছে—"যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এই নির্দেশনা কেউ না মানলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।"

অনেক জেলার বঞ্চিত নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন যে, জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতাকে গুরুত্ব না দিয়ে কিছু আসনে অন্য নেতাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যা দলের জন্য অশনি সংকেত। তারা দাবি করেছেন, যদি অনতিবিলম্বে প্রার্থী পরিবর্তন না করা হয়, তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল দলের জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।