মোদিজী ওনার ডিগ্রি দেখাবেন না, আমরা বুঝি, কেন উনি দেখাতে চাইছেন না।
Автор: বাংলা বাজার BANGLA BAZAR
Загружено: 2025-08-28
Просмотров: 41859
গণতন্ত্রে নাগরিকের জানার অধিকার তথ্যের অধিকার এক মৌলিক ভিত্তি। দেশের সর্বোচ্চ পদে বসে থাকা মানুষটার যোগ্যতা, তাঁর দেওয়া তথ্য যাচাই করার সুযোগ থাকা সেই অধিকারেরই অংশ। কিন্তু যখন দেশের প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার বদলে এক দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তথ্যের ওপর গোপনীয়তার উঁচু পাঁচিল তুলে দেওয়া হয়, তখন তা গণতন্ত্রের স্বাস্থ্য নিয়েই বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করে। একজন সাধারণ নাগরিকের তথ্যের অধিকার আইনের অধীনে করা এক অত্যন্ত সরল আবেদন কীভাবে প্রায় এক দশকের দীর্ঘ বিচারবিভাগীয় লড়াইয়ে পরিণত হলো, এবং শেষ পর্যন্ত দেশের উচ্চ আদালত কীভাবে একজন রাষ্ট্রনেতার ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে জনগণের স্বচ্ছতার অধিকারের ঊর্ধ্বে স্থান দিল, সেই গল্প নিছক একটি ডিগ্রির বিতর্ক নয়। এটা আসলে ভারতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং তথ্যের অধিকার আইনের ভবিষ্যৎ নিয়েই বড় সড় প্রশ্ন। পারমাণবিক চুল্লি, সেনাবাহিনীর অবস্থান, তাঁদের হাতে অস্ত্র শস্ত্র, দেশের উগ্রপন্থা নিয়ে পরবর্তি পরিকল্পনা, হ্যাঁ এসব তো গোপনই থাকবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কোন পরীক্ষা পাস করেছে, নাকি করেই নি, তা কেন গোপন থাকবে? তা কেন রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার জালে আটকে রাখা হবে? আর প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তো এমনি এমনি আসেনি, সন্দেহের বীজ প্রথম বোনা হয়েছিল তাঁর নিজেরই বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হরেকরকম পরস্পরবিরোধী বয়ানের জন্য। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তাঁকে বলতে শোনা গেছে যে, স্কুলের পর তাঁর আর প্রথাগত শিক্ষা হয়নি, তিনি ঘর ছেড়ে হিমালয়ে চলে গিয়েছিলেন । আবার অন্য ভিডিওতে তিনি দাবি করেছেন যে শুভানুধ্যায়ীদের পরামর্শে তিনি করেসপন্ডেন্স কোর্সের মাধ্যমে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন । তাঁরও আগে যখন তিনি মাত্র একজন মূখ্যমন্ত্রী, তখন রাজীব শুক্লাকে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ক্লাস এইটের পরে তিনি আর পড়াশুনোই করেন নি। এই অসংলগ্নতা, হিন্দিতে যাকে বলে পাগলপন, স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করে। কিন্তু ২০১৪ তে তোলা প্রশ্নের উত্তর আসতে সময় লাগলো পাক্কা দু বছর। ২০১৬ সালের মে মাসে, এই ধোঁয়াশা কাটাতে ভারতীয় জনতা পার্টির তরফে অমিত শাহ সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর দুটো ডিগ্রির কপি জনসমক্ষে প্রকাশ করে । তাতে তিনি ১৯৮৩ সালে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম এ করেছেন এবং কি আশ্চর্য তার আগে তিনি ১৯৭৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষার মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বি এ ও পাশ করেছেন। কিন্তু এসব তথ্য পেশ করার সময়ে সাংবাদিক সম্মেলনে পেশ করা ডিগ্রিগুলিতে বেশ কিছু অসঙ্গতি, মানে ঘাপলা মানুষের চোখে পড়ে। সবচেয়ে বড় প্রশ্নটা ওঠে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির বিষয়টাকে নিয়ে, সার্টিফিকেটে লেখা ছিল 'Entire Political Science' বা 'সম্পূর্ণ রাষ্ট্রবিজ্ঞান' । শিক্ষাজগতে এই বিষয়ের নাম নজিরবিহীন। গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়েরই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রাক্তন অধ্যাপক জয়ন্তীভাই প্যাটেল জানাচ্ছেন, সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সটার্নাল ছাত্রছাত্রীদের জন্য মার্কশিটে লেখা বিষয়গুলি পড়ানোই হতো না । কিন্তু উনি তো কেবল পড়েন নি, পাশও করেছেন। কেবল জানা যাচ্ছে না সেই সময়ে তাঁর কলেজের বন্ধুরা কারা ছিলেন? মাস্টারমশাইরা কারা ছিলেন? না এসবের কোনও হদিশ নেই। এছাড়াও, বি এ ডিগ্রির তে দেখা যায়, পাশের বছর ১৯৭৮ বলা হলেও সার্টিফিকেটটা কিন্তু ইস্যু করা হয়েছে ১৯৭৯ সালে । সার্টিফিকেটে নামের বানান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে । এমনকি, বিতর্ক তাঁর জন্মতারিখ পর্যন্ত গড়ায়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি জন্মতারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৫০ হলেও, একটা কলেজের রেজিস্টারে তাঁর জন্মতারিখ ২৯ আগস্ট ১৯৪৯ লেখা হয়েছে । যদিও এর ব্যাখ্যা হিসেবে বলা হয় যে, সেই সময়ে স্কুলে ভর্তির বয়সসীমা পার করার জন্য অনেক অভিভাবকই এরকম করতেন । আরও কিছু টেকনিক্যাল প্রশ্ন উঠেছিল, সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও মূল প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরস্পরবিরোধী অবস্থান। একদিকে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রিকে আসল বলে ঘোষণা করেন , তখন অন্যদিকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই স্কুল অফ ওপেন লার্নিং এক আরটিআই আবেদনের জবাবে জানায় যে, তারা এক বছরের বেশি পুরনো রেকর্ড রাখে না, তাই ১৯৭৮ সালের কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই । একই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটো আলাদা আলাদা বিপরীতধর্মী বক্তব্য রহস্যকে আরও গাঢ় করে তোলে। 'এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স' কোর্সের অস্তিত্ব বা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড সংক্রান্ত স্ববিরোধিতা—উত্তরহীনই থেকে গেছে।
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео mp4
-
Информация по загрузке: